মোশাররফ হোসেন : বাংলাদেশের ৫০তম জন্মদিন এখনো চলছে বিশ্বজুড়ে । সশস্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জন্ম । দেশটির লালসবুজ পতাকা উত্তোলন আর জাতীয় সংগীত “আমার সোনার বাংলা ..আমি তোমায় ভালবাসি .. গান গেয়ে ব্শ্বিজুড়ে শুধু বাঙালি নয় , বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তি পালিত হচ্ছে । চলছে লাল সবুজ আলোক সজ্জা । এজন্য বাংলাদেশ গর্বিত । বাঙালি মাত্র আনন্দিত ।
গত ২৬ মার্চ ২০২১ কানাডার টরন্টো সিটি কর্পোরেশন ভবনে লালের মাঝে ম্যাপেল লীফ পাতা খচিত কানাডার পতাকার পাশে বাংলাদেশের সবুজের মাঝে লালবৃত্তের পতাকা দিনভর উড়েছিল। করোনার বিধিনিষেধের মধ্যে বিপুল জনাসমাগমের সুযোগ ছিলনা। জাতীয় সংগীত বাজানোর সম্ভব হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশে জন্ম নেয়া অন্টারিও প্রদেশের বাঙালি নারী এমপিপি টরন্টো সাউথ ওয়েস্ট ,ডলি বেগম নিজে গেয়েছেন ‘আমার সোনার বাংলা .. আমি তোমায় ..ভালবাসি ।”তখন তার পাশে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের পতাকাকে শ্রদ্ধা জানান টরন্টো সিটি মেয়র জন টরি ও বিচেসেস অব ইস্ট ইয়র্কের সিটি কাউন্সিলর ব্রাডফোর্ড ।
এসম্পর্কে বাঙালি এমপিপি ডলি বেগম বলেন ,এ যেন নাড়ির টান ,আমার জন্মভূমির টান । এ এক স্বরণীয় অনুভূতি , যা আমি কল্পনাও করিনি। করোনার কারণে কুইন্স পার্কের অন্টারিও সংসদভবনে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ওড়ানো না গেলেও সিটি মেয়র জন টরি ও কাউন্সিলার ব্রাড ফোডের্র সহযোগিতায় সিটি ভবনে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ওড়াতে পেরে আমি ধন্য। পাশাপাশি টরন্টো লেখা সিটির নামফলকের রং করা হয়েছিল ‘লাল সবুজ ’।
ডলি আরও বলেন , বৃস্টি ও ঝড়ো হাওয়ার মধ্যে টরন্টো সিটি ভবনে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন আমার জীবনের ঐতিহাসিক অর্জন । বাংলাদেশর মূখ উজ্জল করতে পারায় আমি সকলের কাছে কৃতজ্ঞ ।
এখানেই থেমে থাকেনি বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তির মাইলফলকের কাজ । টরন্টো ডাউন টাউনে অবিস্থিত “সি এন টাওযার ” কানাডার ৫৫৩ মিটার উচু বার্তাবাহি স্তম্ভ ‘লালসবুজ ’আলোয় আলোকিত করা হয় । এ কাজটি সিটি মেয়র জন টরির উদ্যোগে করা হয় ।
অন্য দিকে অটোয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস ও টরন্টোয় বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিস ,আওয়ামী লীগ,বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনসহ অন্যান্য সংগঠন নানা অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু জনমশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তি পালন করেছে ।বাংলাদেশ ফিল্ম ফোরাম ৫জন মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে“আমার ৫০” প্রামাণ্যচিত্র করেছে। তারা জাতীয় পতাকা নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ড্যানফোর্থে শোভাযাত্রা করেছে ।
তবে বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তি উৎসবে অংশ নিয়েছে দুবাইয়ের “বুর্জ আল খলিফা ” ও অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেন স্টোরি সেতু । বুর্জ আল খলিফার সুউচ্চ টাওয়ারটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী স্বরণে বঙ্গবন্ধুর ছবিসহ জাতীয় পতাকার আলোক সজ্জা উৎসব করা হয়েছে । এরকম বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশের সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি স্তম্ভ গ্যাস টাওয়ার ,জাতীয় সংসদ ভবন,হাতির ঝিল বিনোদন কেদ্রসহ সারা দেশে বিভিন্ন ভবন আলোকিত করা হয় । ৫০ বার তোপধ্বনি , প্যারেড স্কোয়ারে আন্তর্জাতিক মানের অনূষ্ঠান ও আলোকরশ্মির খেলা মহামারি করোনার মধ্যেও বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে ।
আশার আলো ছড়িয়েছে মুক্তিযুদ্ধের অত্রিম ও বিশ্বস্ত বন্ধু দেশ ভারত , নেপাল ,ভূটান ও মালদ্বীপের যথাক্রমে প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদি , বিদ্যাদেবী ,লোটে শেরিং ,ও রাষ্ট্রপতি সালিহ ঢাকায় জাতীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন । এসময় দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের সথে তাদের সমঝোতা চুক্তি হয়েছে ।
করোনাকাল শেষে বৃটেনের বাংলাদেশ উৎসব পালনের ঘোষনা বড় অর্জন । তবে রাশিয়া ,চীন ,কানাডা ,যুক্তরাষ্ট্র অস্ট্রেলিয়া,জাপান,কোরিয়া,জার্মানীসহ ইউরোপিয় ইউনিয়ন ,আরব আমিরাত ,তুরস্ক, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যেরদেশসমুহ ও জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে অভিন্দন জানিয়েছে । ৫০ বছরে বাংলাদেশ , উন্নয়নশীল দেশে উত্তরনকে তারা বিশ্বের রোল মডেল বলে প্রশংসা করেছে । মধ্যম আয়ের দেশ বাংলাদেশ, ১৮ কোটি মানুষের পরিশ্রমে ২০৪১ সালে উন্নত দেশে রূপান্তরিত হবার আশা করছে । এটাই বাংলাদেশের উন্নয়নের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য।