আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই, বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা অভিযোগ করে বলেছেন, ‘ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রী ইশরাতুন্নেছা কাদের আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করছেন। আর ওবায়দুল কাদের আপনি বসে বসে তামাশা দেখছেন।’
মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) দুপুরে পৌরসভা কার্যালয়ে নিজ ফেইসবুক আইডিতে লাইভে এসে তিনি এসব কথা বলেন। কাদের মির্জা বলেন, আমার হয়ত জীবন অবসান হবে, আমাকে হয়ত কারাগারে পাঠাবে। এ সব কিছুর অপকর্মের হোতা ইশরাতুন্নেছা কাদের।
কাদের মির্জার মতে, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য আজকে আমার ওপর ও আমার নেতাকর্মীদের ওপর মন্ত্রীর সহ-ধর্মিনী ইসরাতুন্নেছা কাদেরের নির্দেশে ব্যাপক তাণ্ডব চালাচ্ছে পুলিশ। ডিবি পুলিশ, কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ আমার ২০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। যারা আমার সংস্পর্শে এসেছে তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মোঃ আলমগীরের নির্দেশে নোয়াখালীর ডিবি পুলিশ, কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি ও ওসি (তদন্ত) এর নেতৃত্বে আমার নিরীহ নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রেফতার করছে।
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার স্ত্রীর চাপে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতেছেন। একাত্তরের মুজিব বাহিনীর অধিনায়ক থাকাকালীন সময়ে আমাদের নেতা ওবায়দুল কাদেরকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল খিজির হায়াত খান সে সময় বসুরহাটের ব্যবসায়ী আক্তার মিয়ার হোন্ডা করে আমাদের নেতা মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের ওবায়দুল কাদেরকে মাইজদী নিয়ে গিয়েছিল। যার কারণে তিনি প্রাণে রক্ষা পেয়েছে। অথচ যারা আমার রূপালী চত্বরের ৩য় তলায় আলেয়া টাওয়ার আমার ব্যক্তিগত অফিসে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী, ওবায়দুল কাদেরে ছবি ভাংচুর ও লুটপাট করে এবং বঙ্গবন্ধু শতবর্ষ বার্ষিকী উদযাপন মঞ্চ ভাংচুরের মামলায় তাদেরকে গ্রেফতার করতেছে না। সেদিন রাতে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার পৌর কার্যালয়ে নির্বিচারে গুলি বর্ষণ ও ককটেল বিষ্ফোরণের ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদেরকে গ্রেফতার করছে না।
তিনি লাইভে আরো বলেন, অস্ত্রধারীদের নিয়ন্ত্রণ করে নুরুল করিম জুয়েল, ইস্কান্দার মির্জা শামীম, উপজেলা চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন, ঢাকার ব্যবসায়ী নাজমুল হক নাজিম। আর প্রশাসন নিয়ন্ত্রন করে, মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী জাহাঙ্গীর।
‘ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রী আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করছেন আর কাদের তামাশা দেখছেন’
কাদের মির্জা বলেন, সভাপতি খিজির হায়াত খান ও সাধারণ সম্পাদক নুর নবী চৌধুরী জাসদের গণবাহিনীর নেতা ছিলেন। এরা আমাদের আ’লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা কামালকে গুলি করে হত্যা করেছে, মাষ্টার নুরনবী, মুক্তিযোদ্ধা জামাল ও আমার মামা এমদাদুল হককে গুলি করেছে এবং কবিরহাটে ব্যাংক ডাকাতি করেছে। এরা এক সময় আমার কাছে স্বীকারও করেছেন। সে খিজির হায়াত ও নুরনবী চৌধুরীকে ওবায়দুল কাদের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও সেক্রেটারি বানিয়েছেন।
কোম্পানীগঞ্জে আবদুল কাদের মির্জার কর্মসূচীতে নিষেধাজ্ঞা জারি:
১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার কর্মসূচীতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন নোয়াখালী জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়। ১৫ মার্চ নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তারিকুল আলম স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এর আগে মেয়র র্যালি, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টের শুভ উদ্বোধন, আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পালন করার জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ে আবেদন করেছিলেন।
অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট তারিকুল আলম চিঠিতে বলেন, এসব অনুষ্ঠানে প্রচুর লোক সমাগম হবে। বিবদমান দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হতে পারে। তাই এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। শুধু মাত্র ইনডোরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এ অনুষ্ঠান পালন করা যাবে। চিঠির কপি পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কার্যালয়ে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি।